ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এবং চিরকালীন প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব হলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তাঁর জীবনচরিত, চরিত্র, কর্ম এবং মহানবীর বাণী ইসলামিক উক্তি মানবজাতির জন্য এক অনন্য আদর্শ।
পোস্টের বিষয়বস্তু
মহানবীর বাণী ইসলামিক উক্তি
“ভালো কথা বলা সদকা।” (বুখারি ও মুসলিম)
“মুসলমান হলো সে ব্যক্তি যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারি)
“দয়া তাদের উপর করা হয় যারা দয়ালু; তোমরা পৃথিবীর বাসিন্দাদের প্রতি দয়া করো, আকাশের অধিপতি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।” (তিরমিজি)
“ঈমান পূর্ণ হয় না সেই ব্যক্তির, যে নিজের জন্য যা ভালোবাসে তা তার ভাইয়ের জন্যও ভালোবাসে না।” (বুখারি ও মুসলিম)
“কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তা যাচাই না করেই বলে দেয়।” (মুসলিম)
“মুসলমান মুসলমানের ভাই; সে তার প্রতি অত্যাচার করে না, তাকে অসম্মান করে না, তাকে হেয় করে না।” (বুখারি ও মুসলিম)
“আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক চেহারা ও ধনসম্পদ দেখেন না; বরং তোমাদের অন্তর ও আমল দেখেন।” (মুসলিম)
“তুমি যেন রাগ না করো।” (সহিহ বুখারি)
“গরীব-মিসকিনদের ভালোবাসো এবং তাদের সান্নিধ্যে থাকো।” (তিরমিজি)
“যে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে ধৈর্যের শক্তি দেন।” (বুখারি)
“কিয়ামতের দিনে মানুষের মাঝে সর্বোত্তম অবস্থানে থাকবে সেই ব্যক্তি, যে চরিত্রে উত্তম।” (তিরমিজি)
“প্রত্যেক আমল নিয়তের ওপর নির্ভর করে।” (বুখারি ও মুসলিম)
“তোমরা দুনিয়া ভালোবাসবে না, কারণ দুনিয়া হলো অস্থায়ী এবং ধোঁকার স্থান।” (তিরমিজি)
মহানবীর ইসলামিক উক্তি
“তুমি তোমার ভাইয়ের প্রতি হাসিমুখে কথা বলাও একটি সদকা।”
“ক্ষমা করা উত্তম, কারণ আল্লাহ ক্ষমাকারীকে ভালোবাসেন।”
“নিশ্চয়ই কঠিনের সাথে সহজতাও রয়েছে।”
“সত্যবাদিতা নাজাতের পথ।”
“দুনিয়া হচ্ছে এক কৃষিক্ষেত্র, আখিরাতের জন্য।”
“যে আত্মসম্মান হারায়, সে সবকিছু হারায়।”
“রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশক আম্বরের চেয়েও সুগন্ধি।”
“আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।”
“সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা তোমাদের দায়িত্ব।”
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নম্র লোকদের ভালোবাসেন।”
“ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখো, হিংসা দূর করো।”
“তুমি নিজের জন্য যা চাও, অন্য ভাইয়ের জন্যও তাই চাও।”
“প্রতিটি উত্তম কথা সদকা।”
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো সময়মতো সালাত আদায়।”
“সর্বশ্রেষ্ঠ ধন হচ্ছে আত্মতুষ্টি।”
“দুঃখের সময় ধৈর্যই হলো প্রকৃত ধৈর্য।”
“আল্লাহ সেই বান্দাকে ভালোবাসেন, যে তাঁর প্রতি খুশি থাকে।”
“জান্নাত মায়ের পায়ের নিচে।”
“তোমরা অহংকার করো না, কারণ অহংকার আল্লাহর জন্যই যথোপযুক্ত।”
“প্রকৃত মুসলিম সে, যার হাতে ও মুখে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।”
হাদিস মহানবীর ইসলামিক উক্তি
“শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো এমন হৃদয়, যা কৃতজ্ঞ এবং এমন জিহ্বা, যা আল্লাহর জিকিরে রত।” (তিরমিজি)
“শ্রেষ্ঠ দান হলো, কোনো গোপনে দরিদ্রের মুখে খাবার পৌঁছে দেওয়া।” (মুসনাদ আহমদ)
“কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্যের আশায় ধৈর্য ধারণ করো।”
“কাউকে তুচ্ছ মনে করো না, এমনকি একটি হাসিমুখও হতে পারে কারো জন্য বড় সদকা।” (মুসলিম)
“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ হলো বিবাহিত জীবন ধ্বংস করা (তালাক)।” (আবু দাউদ)
“মিথ্যা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, আর সত্য মুক্তির দিকে।” (বুখারি)
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেন।” (মুসলিম)
“মহান আল্লাহ লজ্জাশীল ও উদার। তিনি লজ্জা পান যখন বান্দা তাঁর কাছে হাত তোলে এবং খালি হাতে ফিরে যায়।” (তিরমিজি)
“দুনিয়া এক কারাগার ঈমানদারের জন্য এবং জান্নাত কাফেরের জন্য।” (মুসলিম)
“তুমি হাসো, কারণ তা তোমার ভাইয়ের প্রতি সদকার সমান।” (তিরমিজি)
“কাজের ফলাফল নিয়ত অনুযায়ী হবে।” (বুখারি)
আরো পড়ুন – বিপদ নিয়ে ইসলামিক উক্তি:
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো, যা ধারাবাহিক হলেও সামান্য হয়।” (বুখারি ও মুসলিম)
“তুমি যদি আল্লাহর উপর ভরসা করো, তবে তিনি তোমাকে এমনভাবে রিযিক দেবেন যেমন পাখিকে দেন; তারা সকালে খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে।” (তিরমিজি)
“যে ব্যক্তি গোপনে অন্যের দোষ দেখে ঢেকে রাখে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।” (মুসলিম)
“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার পরিবার-পরিজনের কাছে উত্তম।” (তিরমিজি)
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মসজিদ এবং সবচেয়ে অপছন্দের স্থান হলো বাজার।” (মুসলিম)
“দুনিয়া ও এর ভোগ-বিলাসকে ভয় করো; তা আগের জাতিকে ধ্বংস করেছে।” (মুসলিম)
“তিনটি জিনিস সৌভাগ্যের নিদর্শন: নেককার স্ত্রী, প্রশস্ত ঘর, এবং সুন্দর বাহন।” (তিরমিজি)
“আল্লাহর কসম, তোমরা যদি পাপ না করতে, তাহলে আল্লাহ এমন একটি জাতি সৃষ্টি করতেন যারা পাপ করত এবং তারপর তাওবা করত এবং আল্লাহ তাদের ক্ষমা করতেন।” (মুসলিম)
হাদিস মহানবীর বাণী ইসলামিক উক্তি
“মুমিন হলো এমন ব্যক্তি, যার থেকে মানুষের জান-মাল নিরাপদ থাকে।” (তিরমিজি)
“দুয়া হলো ইবাদতের মগজ।” (তিরমিজি)
“ভালোবাসা ছড়িয়ে দাও, তোমরা পরস্পরের প্রতি সালাম প্রচার করো।” (মুসলিম)
“সততা জান্নাতে পৌঁছে দেয়, আর মিথ্যা জাহান্নামে নিয়ে যায়।” (বুখারি)
“তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে জ্ঞান চাও এবং বোঝার শক্তি কামনা করো।” (তিরমিজি)
“প্রতিদিন সূর্য উদিত হলে প্রত্যেক হাড়ের ওপর সদকা করাই তোমাদের দায়িত্ব।” (বুখারি)
“ভালো কাজ মানুষকে অশুভ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে।” (তিরমিজি)
“দু’জন মানুষের মধ্যে সন্ধি করানো সবচেয়ে উত্তম দান।” (বুখারি)
“তোমরা যখন কাউকে ভালোবাসো, তখন তাকে বলো যে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি আল্লাহর জন্য’।” (তিরমিজি)
“দীনদার সঙ্গী গ্রহণ করো, তাহলে তুমি নিজেও নেক হয়ে যাবে।” (তিরমিজি)
“মুমিনরা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও দয়া প্রদর্শনের দিক দিয়ে এক দেহের মতো; এক অঙ্গ ব্যথা পেলে পুরো দেহ ব্যথা অনুভব করে।” (বুখারি ও মুসলিম)
“যে ব্যক্তি আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখে, আল্লাহ তার জীবিকা বৃদ্ধি করেন এবং তার আয়ু বাড়িয়ে দেন।” (বুখারি ও মুসলিম)
“শান্তি ছড়াও, খাবার দাও, আত্মীয়তা বজায় রাখো এবং রাতে নামাজ পড়ো — যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে; তাহলে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিজি)
“তিনটি বিষয় যার মধ্যে থাকবে, সে মুনাফিক হবে: যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন প্রতিশ্রুতি দেয় ভঙ্গ করে, আর যখন আমানত রাখা হয়, তা খিয়ানত করে।” (বুখারি ও মুসলিম)
“সবচেয়ে বড় প্রতারণা হলো, যখন তুমি তোমার ভাইকে ঠকাও।” (তিরমিজি)
“যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তাকে নিচু করেন।” (মুসলিম)
“সুন্দর কথা বলা সদকা।” (বুখারি)
“মুমিন কখনো গালিগালাজ করে না, বদভাষী হয় না, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে না।” (তিরমিজি)
“তুমি তোমার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে সহায়তা করো, আল্লাহ তোমার প্রয়োজন পূরণ করবেন।” (বুখারি ও মুসলিম)
“দুনিয়া একটি শাস্তি স্থান মুমিনের জন্য এবং কাফেরের জন্য একটি জান্নাত।” (মুসলিম)
“তুমি তোমার নফসের হিসাব নাও, কিয়ামতের দিন হিসাব সহজ হবে।” (তিরমিজি)
“সবচেয়ে উত্তম দান হলো সেই দান যা গোপনে দেওয়া হয়।” (বুখারি)
হাদিসের বাণী মহানবীর ইসলামিক উক্তি
“যে ব্যক্তি মানুষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে, সে সর্বোত্তম ব্যক্তি।” (তিরমিজি)
“সবচেয়ে উত্তম মুসলিম সে, যে নিজের হাত এবং জিহ্বা থেকে অন্যদের নিরাপদ রাখে।” (মুসলিম)
“যে ব্যক্তি রাতে আল্লাহর কথা স্মরণ করে কাঁদে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।” (তিরমিজি)
“নেকি অল্প হলেও কখনো অবহেলা করো না।” (মুসলিম)
“যে ব্যক্তি দুনিয়ার জন্য দুঃখিত হয়, সে দুনিয়ার হস্তগত করবে না।” (তিরমিজি)
“প্রত্যেক ব্যাধির জন্য আল্লাহ নিরাময় সৃষ্টি করেছেন।” (বুখারি)
“তুমি আল্লাহর প্রতি ভরসা করো, তবে নিজের উটকে বাঁধতেও ভুলবে না।” (তিরমিজি)
“আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না, কারণ আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ করেন।” (কুরআন)
“মুমিনের দুঃখ-কষ্ট দূর করলে, আল্লাহ কিয়ামতের দুঃখ দূর করবেন।” (বুখারি ও মুসলিম)
“যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরে, আল্লাহ তার জন্য ধৈর্য সহজ করে দেন।” (বুখারি)
“তোমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত চাও এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাও।” (তিরমিজি)
শেষ কথা
সুতরাং, মহানবীর বাণী ইসলামিক উক্তি মানেই হচ্ছে জীবন ও জীবনের পরবর্তী ধাপের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান দিশারী বাতিঘর। এই উক্তি গুলোর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ প্রশস্ত করতে পারি এবং জান্নাতের দিকে সহজভাবে অগ্রসর হতে পারি।